সাম্প্রতিক

6/recent/ticker-posts

ছাগলের চেয়েও লাভজনক শুকর পালন | গাইড বই

শুকর পালন গাইড। modern pig farming


এই লেখাটা শুধু অমুসলিম পাঠকদের জন্য। মুসলিম ভাইয়েরা দয়া করে এটিকে নেতিবাচকভাবে না নিয়ে এড়িয়ে যাবেন।
ভারতীয় উপমহাদেশে শুকর পালন সাধারণত আদিবাসীদের পেশা। কিন্তু মানুষের রুচি ও খাদ্য চাহিদার পরিবর্তন আসায় এখন বাণিজ্যিকভাবে শুকর পালন লাভজনক হয়ে উঠেছে। বিশেষ করে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের উত্তরবঙ্গের ডুয়ার্স অঞ্চলে শুকর পালন এখন বিশেষভাবে সম্ভাবনাময়। এই অঞ্চলে এবং উত্তর পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলোতে শুকরের মাংসের চাহিদা প্রচুর। 

ভারতের এই অঞ্চলগুলোতে অন্যান্য জাতের চেয়ে স্থানীয় ঘুঙরু জাতের শুকর উন্নতমানের। একদম সাধারণ ব্যবস্থাপনায় এর উৎপাদন ক্ষমতা অনেক বেশি। এই শুকরের মাংসের স্বাদও অনেক বেশি। তাই চাহিদা ব্যাপক। 

ঘুঙরু জাতের শুকর পশ্চিমবঙ্গ, নেপাল ও ভুটানের হিমালয়ের পাদদেশ অঞ্চলে পাওয়া যায়। এদের গায়ের রঙ কালো, চওড়া কান এবং দেহ বিশালাকায়। এদের দেহে লোমের পরিমাণ বেশি। শিরদাঁড়ার উপরে লোমগুলো বড় এবং শক্ত। এদের নাক উপরের দিকে বাঁকানো এবং লেজ অনেকটা লম্বা হয়। 

ঘুঙরু জাতের শুকর সাধারণত শান্ত স্বভাবের হয় ও এদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক বেশি। সঠিক মাত্রায় খাবার খাওয়ালে ৭ মাসে ওজন প্রায় ৭০ থেকে ৮০ কেজি হতে পারে। এদের প্রজনন ক্ষমতাও বেশি। এদের বাচ্চা দেওয়ার ক্ষমতা অনেকটা সাদা বিদেশী শুকর লার্জ হোয়াইট ইয়র্কশায়ারের মতো। অর্থাৎ একবারে ৮টা বাচ্চাও দেয় এরা।

বতর্মানে বাংলাদেশেরও বিভিন্ন এলাকায় বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে শুকর পালন করা হচ্ছে। যদিও বিভিন্ন খামারে ছেড়ে দেওয়া পদ্ধতিতে দেশী বন্য জাতের শুকর পালন হচ্ছে। দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার বিভিন্ন খামারে শুকর পালন করা হয়। প্রতিদিন খাবারের সন্ধানে খামার থেকে শুকরের পাল নিয়ে মাঠে যায় রাখালরা। দেশে আকারভেদে শুকর বিক্রি হয় ৬ হাজার থেকে ৩০ হাজার টাকায়।

শুকরের সবচেয়ে বৈশিষ্ট্য হলো, এদের নিম্নমানের খাদ্যকে উৎকৃষ্ট মানের মাংসে পরিণত করার ক্ষমতা অনন্য। এরা সাধারণত ১ কেজি মাংস রূপান্তরিত করে তিন কেজি খাবার খেয়ে।

শুকরের বৃদ্ধির হার খুব বেশি ৬-৭ মাসে ঘুঙরু জাতের শুকর ওজন প্রায় ৭০ থেকে ৮০ কেজি হতে পারে।

একটি ঘুঙরু জাতের শুকরীর থেকে একবারে গড়ে ১২-১৫ টি বচ্চা পাওয়া যেতে পারে। শুকর সাধারণত বছরে দুই বার বাচ্চা দেয়। অতএব একটি শুকরীর থেকে সাড়া বছরে গড়ে ২৪-৩০ টি বচ্চা পাওয়া যেতে পারে।

শুকরের মাংসে হারের পরিমাণ কম থাকে, তাই মাংসের পরিমাণ বেশি হয়। প্রায় ৬০-৭০ ভাগ দেহের ওজনের সমান মাংস পাওয়া যায়।

এই প্রজাতির শুকর সুষম খাদ্য ছারাও রান্নাঘর বাঁ হোটেলের ফেলে দেওয়া সকল প্রকার উচ্ছিষ্ট খাবার খেয়ে ওজন বারাতে পারে ফলে এর খাবারের খরচ অনেক কমে যায়।

ভারত ও বাংলাদেশের আবহাওয়ার জন্য উপযুক্ত শুকরের জাত

বাংলার কালো শুকর: এদের ওজন ৩০ কেজি, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি, পালন খরচ কম এবং প্রতিবার ৮টি করে বাচ্চা দেয়, বছরে দুইবার বাচ্চা দেয়।

ঘুঙরু কালো শুকর: ওজন ৮০ কেজি, প্রতিবার ১০টি করে বাচ্চা দেয়। বছরে দুইবার বাচ্চা দেয়।

ইয়র্কশায়ার: ইংল্যান্ডের বিখ্যাত সাদা শুকর, ভারতীয় আবহাওয়ার জন্য উপযুক্ত, ওজন ৪০০ কেজি, পালন খরচ বেশি, বছরে দুইবার করে প্রতিবার ১৪টি করে বাচ্চা দেয়।

বার্কশায়ার: ইংল্যান্ডের সাদা-কালো শুকর, ওজন ৩০০ কেজি, বছরে দুইবার প্রতিবার ১৪টি করে বাচ্চা দেয়।

সংকরায়ণ: খামারে প্রতি ৮টি দেশী মাদী শুকরের বিপরীতে একটি বিদেশী মদ্দা বা পুরুষ শুকর রাখতে হবে, সংকর বাচ্চা বড় হলে ১৫০ ওজন হয়।

শুকর পালন শুরু করতে চাইলে নিচের বইটি উপকারে আসতে পারে: 

Post a Comment

2 Comments

  1. আমার কিছু শোকরের বাচ্চা লাগবে বাংলাদেশে। 01725579317

    ReplyDelete
    Replies
    1. ভাই, বাংলাদেশে পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাড়া ওভাবে শুকরের বাচ্চা হাটেবাজারে বিক্রি হয় না। আপনি বরং উত্তরবঙ্গ বা রাজশাহী এলাকায় খোঁজ নিয়ে দেখতে পারেন।

      Delete