সাম্প্রতিক

6/recent/ticker-posts

পাওয়ার টিলার কেনার আগে যেসব বিষয় খেয়াল রাখা জরুরি

how to choose your power tiller

কর্ষণ ডটকম: লাঙ্গল জমি চাষ এখন ইতিহাস। সারা দেশ খুঁজে হয়তো হাতেগোনা কয়েকটা লাঙ্গল পাওয়া যাবে। জোঁয়ালও প্রায় বিলুপ্ত। কারণ এখন হাল চাষ, মই দেয়া বা জমি সমান করা, ফসল পরিবহনের জন্য গরুরগাড়ির দরকার হয় না। সবই এখন করা যায় ডিজেল ইঞ্জিন চালিত পাওয়ার টিলার দিয়ে।

পাওয়ার টিলার এমন একটি যন্ত্র যেটি দিয়ে কৃষির এমন কোনো কাজ নেই যেটি করা যায় না। কথাটা একটু বাড়াবাড়ি মনে হতে পারে। কিন্তু আপনার যদি সামান্য মেকানিক্যাল প্রযুক্তি জ্ঞান থাকে তাহলে দেখবেন মোটেও বাড়িয়ে বলা হয়নি। 

উদাহরণ দিয়েই বলি, একটি পাওয়ার টিলারের প্রধান কাজ জমি চাষ করা। এবার আপনি বিভিন্ন এক্সটেনশন লাগিয়ে এটি দিয়ে বিভিন্ন কাজ করতে পারবেন। যেমন রিপাল ব্লেড লাগিয়ে ফসল কাটা, মাড়াই, ট্রান্সপ্ল্যান্টার এক্সটেনশন লাগিয়ে ধান রোপণ, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিএআরআই বা বারি) উদ্ভাবিত এক্সটেনশন লাগিয়ে আলু বোনা, আলু সংগ্রহ, পাম্পের সঙ্গে পুলি লাগিয়ে পানি সেচ, পেছনে ট্রলি লাগিয়ে পণ্য পরিবহন ইত্যাদি কাজ এই যন্ত্র দিয়েই করা সম্ভব।

তবে যেহেতু মূলত জমি চাষ করার উদ্দেশ্যেই আমরা পাওয়ার টিলার কেনার সেহেতু এ বিষয়টি বিবেচনায় রেখেই কিছু পরামর্শ তুলে ধরা হলো। মানে হলো, পাওয়ার টিলার কেনার সময় কোন কোন বিষয়গুলো নজরে রাখতে হবে এবং এটির যত্নআত্তিই কীভাবে নেবেন এই কিছু কথা। 

আপনি কী ধরনের চাষ করবেন সেটির ওপর ভিত্তি করে পাওয়ার টিলার কিনবেন। যদি কাদা মাটি চাষ করেন তাহলে ওজন কম এমন পাওয়ার টিলার নির্বাচন করুন। আর শুকনা জমি অর্থাৎ শুকনা মাটি চাষ করতে চাইলে হেভিওয়েট অর্থাৎ ভারী মেশিন কিনতে পারেন।

তবে আপনার যদি উদ্দেশ্য বহু হয়। অর্থাৎ পাওয়ার টিলারকে যদি মালটিপারপাস মেশিন বানাতে চান তাহলে ভারী মেশিন কেনাই ভালো।

কেনার সময় খেয়াল করুন ইঞ্জিন টুওয়ে কুলিং সিস্টেম আছে কিনা। অর্থাৎ পানি এবং এয়ারকুলার (ফ্যান) দুইভাবেই ঠান্ডা করার ব্যবস্থা থাকলে খুবই ভালো হয়।

নরম বা কাদামাটি চাষের জন্য ১২ ঘোড়া (১২ হর্সপাওয়ার) ক্ষমতা মেশিনই যথেষ্ট। আর যদি শুকনা মাটি চাষ ও অন্য অনেক কাজে বিশেষ করে পণ্য পরিবহনের কাজেও ব্যবহার করতে চান সেক্ষেত্রে ১৬ ঘোড়া কেনা ভালো। তবে জ্বালানি সাশ্রয় করতে চাইলে আপনার জন্য উপযুক্ত ১২ ঘোড়া।

কেনার আগে ডিজেল ইঞ্জিনের রঙ খেয়াল করুন। বডি কালো বা অন্য কোনো রঙ করা হলে সন্দেহজনক। কারণ অনেক সময় স্প্রে করে পুরাতন মেশিন নতুন বলে বিক্রি করে অসাধু ব্যবসায়ীরা। নেচারাল সিলভার কালার হওয়াই ভালো। টিলারের বডির গায়ে ব্রান্ডের নাম খোদাই করা আছে কিনা খেয়াল করুন। ইঞ্জিনের গায়েও কিন্তু ব্রান্ডের নাম খোদাই করা থাকে। যেমন ইয়ানমার হলে এই নামটি ইংরেজিতে খোদাই করা থাকবে।

কেনার সময় স্পেয়ার পার্টস আর লোহার চাকা বুঝে নিন। 

পাওয়ার টিলার কেনার পরে মাঠে নামানোর আগে অবশ্যই একবার সার্ভিসিং করে নিন। মবিল পাল্টে ফেলুন।
 
নতুন পাওয়ার টিলার কেনার পরে প্রথমবারের জন্য ৫/৬ বিঘা চাষ করেই মবিল পাল্টে ফেলুন। এতে মেশিনের আয়ু বাড়বে। 

মেশিনের আয়ু বাড়াতে অবশ্যই ভালো মানের লুব্রিকেন্ট (অনেকে বলেন মবিল, এটি আসলে লুব্রিকেন্টের একটি ব্রান্ড) ব্যবহার করুন। প্রতি ২০ বিঘা জমি চাষের পর মবিল পাল্টাতে পারলো ভালো।

মেশিনের পানির ট্যাংকে নোংরা পানি ব্যবহার করবেন না। যে টিউবওয়েলে আয়রন বেশি ওঠে সেটির পানি দিবেন না। আর মেশিন চালু অবস্থায় কখনোই ট্যাংকটি খালি রাখা যাবে না। অবশ্যই পানি ভরতে হবে।

Post a Comment

0 Comments