অধিক ফসল উৎপাদনের জন্য উচ্চ ফলনশীল ও হাইব্রিড জাতের চাষ বেড়েছে। এ ধরনের ফসল উৎপাদনের জন্য বিভিন্ন রাসায়নিক সার ব্যবহার করতে হচ্ছে চাষীকে। ফলে বিভিন্ন মৌসুমে দেশে প্রচুর পরিমাণে রাসায়নিক সারের চাহিদা থাকে। কৃষককে প্রণোদনা দিতে সরকার সারের ওপর বিপুল পরিমাণে অর্থ ভর্তুকি দেয়। কিন্তু সারের এই ব্যাপক চাহিদার সুযোগে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ভেজাল মেশায়। এমনকি দেশের বিভিন্ন প্রান্তে প্রায়ই ভেজাল সার কারখানা সিলগালা করার খবর বিভিন্ন পত্রপত্রিকা ও টেলিভিশন চ্যানেলে আসে। ফসফেট সারে মাটি, পটাশ সারে ইটের গুড়া ইত্যাদি মেশানোর খবরও পাওয়া যায়। তবে চাষীরা একটু সচেতন হলেই আসল ও ভেজাল সারের পার্থক্য বুঝতে পারবেন। নিচে কয়েকটি সহজ কৌশল বর্ণনা করা হলো:
ইউরিয়া |
আসল ইউরিয়া সারের দানাগুলো সমান হয়। তাই কেনার সময় প্রথমেই দেখে নিতে হবে যে সারের দানাগুলো সমান কিনা। ইউরিয়া সারে সাধারণত কাচের গুঁড়া অথবা লবণ ভেজাল হিসেবে যোগ করা হয়। চা চামচে অল্প পরিমান ইউরিয়া সার নিয়ে তাপ দিলে এক মিনিটের মধ্যে অ্যামোনিয়ার ঝাঁঝালো গন্ধ নাকে আসবে, সারটি পানিতে মিশে যাবে। যদি ঝাঁঝালো গন্ধ বের না হয় ও মিশে না যায়, তাহলে বুঝতে হবে সারটি ভেজাল।
টিএসপি |
টিএসপি সার পানিতে মিশালে সাথে সাথে গলবে না। আসল টিএসপি সার ৪ থেকে ৫ ঘণ্টা পর পানির সাথে মিশবে। কিন্তু ভেজাল টিএসপি সার পানির সাথে মিশালে অল্প কিছুক্ষণের মধ্যেই গলে যাবে বা পানির সাথে মিশে যাবে।
ডিএপি |
ডিএপি সার চেনার জন্য চামচে অল্প পরিমান সার নিয়ে একটু গরম করলে এক মিনিটের মধ্যে অ্যামোনিয়ার ঝাঁঝালো গন্ধ পাওয়া যাবে এবং তা গলে যাবে। যদি না গলে তবে বুঝতে হবে সারটি সম্পূর্ণ ভেজাল। আর যদি আংশিকভাবে গলে যায় তবে বুঝতে হবে সারটি আংশিক পরিমান ভেজাল আছে। এছাড়া কিছু পরিমান ডিএপি সার হাতের মুঠোয় নিয়ে চুন যোগ করে ডলা দিলে অ্যামোনিয়ার ঝাঁঝালো গন্ধ বের হবে। যদি অ্যামোনিয়ার ঝাঁঝালো গন্ধ বের না হয় তাহলে বুঝতে হবে সারটি ভেজাল।
পটাশ সার |
পটাশ সারের সাথে ইটের গুঁড়া ভেজাল হিসেবে মেশানো হয়। গ্লাসে পানি নিয়ে তাতে এমওপি বা পটাশ সার মিশালে সার গলে যাবে। তবে ইট বা অন্য কিছু ভেজাল হিসেবে মেশানো থাকলে তা পানিতে গলে না গিয়ে গ্লাসের তলায় পড়ে থাকবে। তলানি দেখে সহজেই বুঝা যাবে সারটি আসল নাকি ভেজাল।
জিঙ্ক সালফেট |
জিংক সালফেট সারে ভেজাল হিসেবে পটাশিয়াম সালফেট মেশানো হয়। জিংক সালফেট সার চেনার জন্য এক চিমটি জিংক সালফেট হাতের তালুতে নিয়ে তার সাথে সমপরিমান পটাশিয়াম সালফেট নিয়ে ঘষলে ঠান্ডা মনে হবে এবং দইয়ের মতো গলে যাবে।
0 Comments