তুলার ক্ষেত |
জমি তৈরি
চাষ দেওয়ার আগেই বিঘাপ্রতি ১.০-১.৫ টন গোবর/কম্পোস্ট সার জমিতে ছিটিয়ে দিতে হবে। তারপর বৃষ্টির ফাঁকে ফাঁকে মাটির জো অবস্থা বুঝে ৩-৪টি চাষ ও মই দিয়ে জমি সমতল ও ঝুরঝুরে করে নিতে হবে। বিভিন্ন আবর্জনা ও আগাছা পরিষ্কার করতে হয়৷ প্রতিকূল পরিবেশে বিনা চাষে ডাবলিং পদ্ধতিতে তুলা বীজ বপণ করেও ভালো ফলন পাওয়া যায়।
চারা তৈরি করে রোপণ
উপরে ছাউনির ব্যবস্থা করে কাগজ অথবা পলিথিন প্যাকেটে চারা তৈরি করে ১০-১২ দিন বয়সী চারা মূল জমিতে বপণ করা যায়। এভাবে নাবীতে (দেরিতে) পাট ও আউশ ধান কেটে ঐ জমিতে তুলা বপণ করে ভালো ফলন পাওয়া যায়।
বপণ সময়
জাত ভেদে তুলার বীজ ১ আষাঢ় থেকে ১৫ শ্রাবণ পর্যন্ত (১৫ জুন থেকে ৩০ জুলাই পর্যন্ত) বপণের সবচে উপযুক্ত সময়। তবে ১৫ ভাদ্র র্অথাৎ ৩১ আগস্ট পর্যন্ত বীজ বপণ করা যেতে পারে। হাইব্রডি জাত আগাম বপণ করা উত্তম। উপযুক্ত সময়ে বীজ বপণ করা হলে তুলা উঠিয়ে ঐ জমিতে সহজইে বোরো ধান, আলু, গম, ভুট্টা ও সবজির ফসল আবাদ করা যায়।
বীজ হার
তুলা উন্নয়ন বোর্ডের উফশী জাতের ক্ষেত্রে বিঘা প্রতি ১.০ কেজি এবং হাইব্রিডের ক্ষেত্রে ৫০০-৬০০ গ্রাম বীজের প্রয়োজন হয়। বীজ বপণের আগে তুলাবীজ ৩-৪ ঘণ্টা পানিতে ভিজিয়ে শুকনো মাটি বা ছাই দিয়ে ঘষে নেওয়া ভালো। উচ্চ ফলনের জন্য বিঘাপ্রতি কমপক্ষে ৩ হাজার গাছ থাকা আবশ্যক।
বপণ পদ্ধতি
তুলা বীজ সারিতে বপণ করতে হয়। সারি উত্তর-দক্ষিণ বরাবর লম্বা-লম্বি করে তৈরি করতে হবে। উপযুক্ত সময়ে বীজ বপণ করা হলে সব জাতের ক্ষেত্রেই সারি থেকে সারি ৯০ সেন্টিমিটার (৩ ফুট বা ২ হাত) এবং গাছ থেকে গাছের দূরত্ব ৪৫ সেন্টিমিটার (১.৫ ফুট বা ১ হাত) বজায় রেখে বীজ বপণ করতে হবে। সারি বরাবর মাটি উঁচু করে ( ridge & furrow পদ্ধতি) তার উপর বীজ বপণ করা উত্তম। কারণ এতে জমি থেকে পানি নিষ্কাশন সহজ হয়, চারা গাছ জলাবদ্ধতার হাত থেকে রক্ষা পায়। ফলে চারাগাছের বৃদ্ধি ভালো হয়। সারির উপর নির্দিষ্ট দূরত্বে আধা ইঞ্চি গভীরে ২-৩ টি বীজ সামান্য মাটি দিয়ে হাল্কাভাবে ঢেকে দিতে হবে।
বীজ বপণ দূরত্ব
মাটির ধরণ বপণ দূরত্ব
আগাম (১৫ জুলাইয়ের আগে) সঠিক সময়ে (১৫ জুলাই-১৫ আগষ্ট) নাবী (১৫ আগষ্টের পর)
বেলে দোয়াঁশ ১০০ সেমি: X ৬০সেমি: ১০০ সেমি: X ৬০সেমি: ১০০ সেমি: X ৫০সেমি:
দোয়াঁশ ১০০ সেমি: X ৬০সেমি: ১০০ সেমি: X ৬০সেমি: ১০০ সেমি: X ৬০সেমি:
এটেল দোয়াঁশ ১০০ সেমি: X ৫০সেমি: ১০০ সেমি: X ৬০সেমি: ১০০ সেমি: X ৫০সেমি:
বীজ বপণের জন্য প্রস্তুত করা
বীজতুলা জিনিং এর পর তুলাবীজের গায়ে ক্ষুদ্র আঁশ বা ফাজ থাকে৷ সে জন্য একটি বীজ থেকে অন্যটি সহজে আলাদা করা যায় না৷ বপণের সুবিধার জন্য তুলাবীজ ৩-৪ ঘণ্টা পানিতে ভিজিয়ে নিয়ে তা ঝুরঝুরে মাটি বা শুকনো গোবর অথবা ছাই দিয়ে এমনভাবে ঘষে নিতে হবে যেন আঁশগুলো বীজের গায়ে লেগে যায় এবং একটা হতে অন্যটা সহজেই আলাদা হয়ে যায়৷ তবে জমিতে পর্যাপ্ত রস থাকলে তুলাবীজ পানিতে না ভিজিয়ে বীজ আলাদা করতে হবে৷
সার প্রয়োগ
ভালো ফলন পেতে হলে তুলা ক্ষেতে উপযুক্ত সার সঠিক পরিমান ও নিয়মমাফিক ব্যবহার করতে হবে। মাটিতে জৈব ও রাসায়নিক উভয় প্রকার সার প্রয়োগ করা প্রয়োজন ৷ জৈব সার ব্যবহারে মাটির জৈব পদার্থ বৃদ্ধি পায়৷ ফলে মাটির পানি ধারণক্ষমতা বাড়ে, অণুজীবের কার্যকারিতা বৃদ্ধি পায় এবং অনুখাদ্যের (মাইক্রো নিউট্রিয়েন্ট) পরিমাণ বাড়ে৷
বিঘাপ্রতি সারের মাত্রা ও প্রয়োগ পদ্ধতি
সারের নাম সারের পরমিান (কেজি/বিঘা)
মোট পরমিান জমি তৈরিকালীন প্রয়োগ (ব্যাসাল) পার্শ্ব প্রয়োগ
১ম ২য় ৩য় ৪র্থ
(২০-২৫ দিনে) (৪০-৫০ দিনে) (৬০-৭০ দিনে) (৭০-৮০ দিনে)
ইউরিয়া ২৫-৩০ ১.৫-২.৫ ২.৫-৩ ৭.৫-৯ ৭.৫-৯ ৫-৬
টিএসপি/ডিএপি ২৫-৩০ ১০-১২ - *৮-৯ *৮-৯ -
এমওপি ৩০-৩৩ ৩-৪ ৫-৬ ৯-১০ ৯-১০ ৪-৫
জিপসাম ১৪-১৬ ৪-৫ - ৬-৭ ৪-৫ -
সলিউবল বোরণ ২.৫-৩ ১-১.৫ ১ - ০.৫০ -
জিংক ২.৫-৩ ১-১.৫ ১ - ০.৫০ -
ম্যাগসিয়াম সালফেট ২.৫-৩ ১-১.৫ ১ - ০.৫০ -
গোবর/কম্পোস্ট ৬০০-৮০০ - - - - -
চুন (অম্ল মাটিতে) ১০০-১৫০ বীজ বপণের এক মাস আগে প্রয়োগ করতে হবে
নোট: বিঘপ্রতি ইউরিযা সারের পরিমাণ ও প্রয়োগ সময় তুলার জাত, প্রয়োগ পদ্ধতি, মাটির উর্বরাশক্তি এবং আবাদের সময়ে আবহাওয়ার উপর নির্ভর করে নির্ধারণ করতে হবে। *গাছের ৪০ দিন এবং ৬০ দিন বয়সে টিএসপি সারের পরিবর্তে ডিএপি সার পার্শ্ব প্রয়োগ করলে ভালো ফলন পাওয়া যায়। সেক্ষেত্রে ইউরিয়া সার বিঘাপ্রতি ৫-৬ (১৮%) কম ব্যবহার করতে হবে।
সার প্রয়োগ পদ্ধতি
ব্যাসাল সার বীজ বপণের জন্য তৈরি নালায় অথবা পৃথক নালা কেটে প্রয়োগ করতে হবে৷ পার্শ্ব প্রয়োগের ক্ষেত্রে সারি থেকে ৫-৬ সেমি: দূরে নালা কেটে সার প্রয়োগ করে মাটি দিয়ে ঢেকে দিতে হবে৷ একবার সারির যে দিকে পার্শ্ব প্রয়োগ করা হবে পরবর্তিতে তার বিপরীত দিকে পার্শ্ব প্রয়োগ করতে হবে৷ ব্যাসাল সার প্রয়োগ কোন কারণে সম্ভব না হলে তা চূড়ান্ত চারা পাতলাকরণের পর পার্শ্ব প্রয়োগ করতে হবে৷ তুলা গাছ ফুল ধারণ পর্যায় থেকে অধিক হারে খাদ্য গ্রহণ শুরু করে যা বোল ধারণ পর্যন্ত অব্যাহত থাকে৷ ফলে এ সময়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
ফলিয়ার স্প্রে
গাছের বয়স ৫০-৬০ দিনের পর থেকে ১০০ দিন পর্যন্ত ১০-১৫ দিন অন্তর অন্তর ৩ থেকে ৪ বার মাত্রানুযায়ী ফলিয়ার স্প্রে প্রয়োগ করতে হবে। সেক্ষেত্রে ইউরিয়া অথবা ডিএপি সার ২% হারে (প্রতি ১০ লিটার পানিতে ২০০ গ্রাম ইউরিয়া/ডিএপি সার), এমওপি সার ১% হারে (প্রতি ১০ লিটার পানিতে ১০০ গ্রাম এমওপি সার) এবং মাইক্রো নিউট্রিয়েন্ট যেমন সলিউবল বোরন, জিংক সালফেট ০.১০-০.১৫% হারে ( প্রতি ১০ লিটার পানিতে ১০-১৫ গ্রাম) পানিতে ভালো করে মিশিয়ে গাছের পাতায় স্প্রে করলে গাছে বোল সংখ্যা বাড়ে এবং বেশি হয়, ফলে অধিক ফলন পাওয়া যায়।
কম্পোস্ট/গোবর সার প্রয়োগ
হেক্টর প্রতি ১২.৫ টন কম্পোস্ট সার, ২.৫ টন ভার্মি কম্পোস্ট/পোল্ট্রির বিষ্ঠা অথবা সম্ভব হলে ৫-৬ টন পচা গোবর সার জমিতে ছিটিয়ে চাষ দিয়ে মিশিয়ে দিতে হবে৷ তুলার ফলন বৃদ্ধি ও মান উন্নয়নের জন্য জৈবসার প্রয়োগ করা প্রয়োজন৷
সবুজ সার প্রয়োগ
ধইঞ্চা ও শন-পাট সবুজ সারের জন্য উপযুক্ত৷ তুলার জমিতে জ্যৈষ্ঠ মাসের প্রথম সপ্তাহে ৫০ কেজি/হেক্টর সবুজ সারের বীজ বুনতে হয় এবং ৪৫-৫০ দিন পরে জমিতে চাষ দিয়ে সবুজ অবস্থায় ধইঞ্চা বা শন-পাটের গাছ মাটির সাথে মিশিয়ে দিতে হয়৷ গাছগুলি মাটিতে পচে মিশে যাওয়ার পর তুলাবীজ বপণ করতে হয়৷
জাত নির্বাচন
তুলা উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃক গবেষণার মাধ্যমে উদ্ভাবিত ১২টি তুলার জাতের মধ্যে বর্তমানে ৫টি উচচ ফলনশীল তুলার জাত এবং বেসরকারী পর্যায়ে ২টি সীড কোম্পানি কর্তৃক আমদানিকৃত হাইব্রিড জাত দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে চাষাবাদ করা হচেছ৷ জাতগুলোর তুলনামূলক বৈশিষ্ট্য প্রদত্ত হলো:-
সিবি-৫: জাতটির পাতা কিছুটা শুয়াযুক্ত বিধায় জ্যাসিড পোকার আক্রমণ প্রতিরোধী৷ তবে বোলওয়ার্ম ও বৱাইট রোগের প্রতি সংবেদনশীল৷ জাতটি উচচ জিওটি সম্পন্ন৷ এ জাতটি যশোর অঞ্চলের বৃহত্তর যশোর ও কুষ্টিয়া জেলায় চাষাবাদের উপযোগী৷
সিবি-৯: জাতটি কিছুটা শুয়াযুক্ত বিধায় জ্যাসিড প্রতিরোধী৷ বোল সাইজ বড় এবং উচচ ফলনশীল৷ তুলা চাষের আওতাধীন অধিকাংশ জেলায় চাষের জন্য উপযোগী৷ জাতটি অপেক্ষাকৃত দীর্ঘ মেয়াদী৷ গাছের গঠন দূর্বল প্রকৃতির হয়ে থাকে, ফলে অধিক ঝড়ে গাছ ভেঙ্গে পড়ার সম্ভাবনা থাকে৷
সিবি-১০: জাতটি অপেক্ষাকৃত আগাম৷ এ জাতটি অন্যান্য ফসল অর্থাৎ সাথী ফসলের সাথে চাষাবাদ সুবিধাজনক৷ আগাম বপণ করলে এ জাতের তুলা ফসল উঠিয়ে নাবী গম, ভুট্টা, আলু প্রভৃতি রবি ফসল চাষ করা যায়৷ যশোর ও রংপুর অঞ্চলের জেলা সমুহে চাষের উপযোগী৷
সিবি-১১: জাতটি আগাম৷ এ জাতের পাতা ওকরা জাতীয় এবং লিফ এরিয়া কম৷ পোকা মাকড়ের আক্রমণ প্রতিরোধী হওয়ায় ফসল উৎপাদন খরচ কম৷ ফলন বেশি৷ জাতটি উত্তরাঞ্চলে চাষাবাদের জন্য উপযোগী৷
সিবি-১২: জাতটি আগাম৷ রোগ প্রতিরোধী তবে বোল রটের আক্রমণ কিছুটা হতে পারে৷ জ্যাসিড ও এফিডের আক্রমণ হলেও চর্বনকারী পোকা (যেমন: বোলওয়ার্ম, স্পটেড বোলওয়ার্ম এবং স্পোডোপটেরা) এর আক্রমণ প্রতিহত করতে পারে৷ জাতটি উচচ ফলনশীল৷ ফলন বেশি (৩.৩-৪.৫) যশোর অঞ্চলে চাষাবাদের জন্য উপযোগী৷
রূপালী-১ হাইব্রিড: গণচীনে উদ্ভাবিত হীরা হাইব্রিড রূপালী-১ এর জীবনকাল ১৬৫-১৭০ দিন, জিওটি ৪১%, আঁশ মিহি ,লম্বা ও মজবুত, অগাম জাত, ডাল ভেঙ্গে পড়ে না, স্পটেড বোলওয়ার্ম এর আক্রমন খুব একটা পরিলক্ষিত হয় না, ১০০% বোল থেকে তুলা পাওয়া যায়৷ সুপ্রিম সীড কোম্পানী লিমিটেড কর্তৃক বাজারজাত হচেছ৷ বিঘা প্রতি ফলন ১৪-১৫ মণ৷ ( সূত্র: সুপ্রিম সীড সীড লি:)
ডি.এম-১ হাইব্রিড: জাতটি গণচীন থেকে আমদানী করা হয়েছে৷ জীবনকাল ১৫০-১৫৫ দিন, জিওটি ৪২% এর বেশী, ডাল ভেঙ্গে পড়ে না, আঁশ মিহি, লম্বা ও মজবুত স্পটেড বোলওয়ার্ম এর আক্রমন তেমন একটা পরিলক্ষিত হয় না৷ জাতটি লাল তীর কোম্পানী বাজারজাত করছে। ফলন বিঘা প্রতি ১৪-১৫ মণ। সূত্র: তীর
হরমোন স্প্রে
গাছরে ফুল, কুড়ি ও বোল সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য ৫০-৬০ দিন বয়সের পর থেকে ৭-১০ দিন পর পর ৩-৪ বার হরমোন যেমন প্যানাফকোর্ট/ফ্লোরা ইত্যাদি গাছের পাতায় প্রয়োগ করা হলে অধিক ফলন পাওয়া যায়। গাছের পাতা সবুজ রাখার জন্য সালফার সার প্রতি ১০ লিটার পানিতে ২০ গ্রাম মিশিয়ে প্রয়োগ করা যেতে পারে।
অন্তর্বর্তীকালীন পরিচযা
ক. শূন্যস্থান পূরণ (গ্যাপ ফিলিং)
বীজ বপণের ৭-৮ দিনের মধ্যে যে সব গর্তে/মাদায় চারা গজায়নি সে সকল মাদায় বা তার পার্শ্বে পুনরায় বীজ বপণ করতে হবে। বীজ বপণের সময় জমির কিনারায় কিছু অতিরিক্ত বীজ বপণ করে বাড়তি চারা উৎপাদন করলে পরবর্তীতে ওই চারা দিয়েই গ্যাপ ফিলিং করা যায়। চারা উঠিয়ে গ্যাপ ফিলিং বৃষ্টি বা মঘেলা দিনে করা উত্তম।
খ. চারা পাতলা করণ ও আগাছা দমন
চারা গজানোর ১০ দিনরে মাথায় প্রতি মাদায় ২টি এবং ২০ দিনরে মধ্যে প্রতি মাদায় ১টি করে সুস্থ সবল চারা রেখে বাকী চারা তুলে ফলেতে হবে। চারা পাতলা করনরে সময় হাত/কাঁচি/কোদাল দ্বারা আগাছা দমন করতে হবে। গাছে পুরোদমে ফুল না আসা পযন্ত অর্থাৎ বপণের ৬০-৭০ দিন পর্যন্ত জমি আগাছা মুক্ত রাখতে হবে। আগাছানাশক ব্যবহার করেও আগাছা দমন করা যেতে পারে, তবে আগাছানাশক নির্বাচন এবং এর প্রয়োগরে ক্ষেত্রে সর্তকতা অবলম্বন করা প্রয়োজন।
গ. গোড়া মাটি বেঁধে দেওয়া
বীজ বপণের ৪০ দিন পর ১ম বার অর্থাৎ ২য় ইউরিয়া সারের পার্শ্ব প্রয়োগের সময় এবং আবার বীজ বপণের ৬০ দিন পর ২য় বার অর্থাৎ ৩য় ইউরিয়া সাররে র্পাশ্ব প্রয়োগরে সময় গাছরে গোড়া মাটি দিয়ে ভাল করে বেঁধে দিতে হবে। কোদাল দ্বারা দু’সাররি মাঝরে মাটি টেনে গাছরে গোড়া বাঁধার কাজটি করা যেতে পারে। ফলে গাছ সহজে ঢলে পড়বে না এবং জমি থেকে পানি নিষ্কাশন ও মাটিতে পরিমিত রস ধরে রাখা সহজ হবে।
ঘ. সেচ ও নিষ্কাশন
উপযুক্ত সময় (৩০, জুলাই এর মধ্যে) বীজ বপণ করলে তুলা ফসলে কদাচিৎ সেচের প্রয়োজন দেখা দিতে পারে। কিন্তু নাবীতে বপণ করার কারণে যদি নভেম্বর/ডিসেম্বর মাসে জমিতে রস কমে যায় তবে ১/২টি হাল্কা সেচের প্রয়োজন হতে পারে। তুলার জমিতে বোল ফাটা শুরু করা পর্যন্ত যাতে পরিমিত রস থাকে তা নিশ্চিত করা দরকার। সাধারণত গাছের বয়স ৫ মাস হলে আর সেচ দেওয়া উচিত নয়, এতে ফসল নাবী হওয়ার আশংকা থেকে মুক্ত থাকবে।
তুলা গাছ কোনো বয়সেই জমে থাকা পানি ২-৩ দিনের বেশি সহ্য করতে পারে না। চারা অবস্থায় পানি নিষ্কাশনের দিকে অধিক নজর দিতে হবে, তা না হলে গাছের গোড়াপচা রোগ হওয়ার আশঙ্কা থাকে। জমি সবসময় ভিজা, স্যাঁতসেঁতে থাকলে গাছের কুঁড়ি, ফুল ও ফল ঝরে যায়। এরূপ অবস্থায় জমি থেকে অতিরিক্ত পানি অপসারণের মাধ্যমে শুকানোর ব্যবস্থা করতে হবে।
ঙ. অঙ্গ ছাঁটাই ও ডগা র্কতন
অভিজ্ঞতার দেখা যায়, তুলা গাছের গোড়ার দিকে ১-২টি অংগজ শাখা কেটে দিলে গাছের উপরাংশের ফলধারী শাখা-প্রশাখার বিকাশ ও বৃদ্ধি ভালো ঘটে। আলো বাতাসের চলাচল বাড়ে এবং রোগ ও পোকামাকড়ের আক্রমণ কম হয় ফলে ফলন বৃদ্ধি পায়।
চ. রগিং বা অবাঞ্ছিত জাতের গাছ তুলে ফেলা
যে জাতের তুলাচাষ করা হয় সে জাত ভিন্ন অন্য জাতের তুলা গাছকে ‘রগ’ বা অবাঞ্ছিত জাতের গাছ বলে৷ অবাঞ্ছিত জাতের গাছগুলো ফুল ফোটার পূর্বে তুলে ফেলাকে ‘রগিং’ বলে৷ জাতের বিশুদ্ধতা রক্ষার জন্য ‘রগিং’ অতি জরুরি।
আরো পড়ুন: প্রশ্নোত্তরে তুলা চাষ পদ্ধতি
0 Comments