সাম্প্রতিক

6/recent/ticker-posts

লাম্পি স্কিন ডিজিসের প্রতিষেধক টিকা আছে কি

লাম্পি স্কিন ডিজিস বা এলএসডি আক্রান্ত গরু
লাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত গরু
গরুর লাম্পি স্কিন ডিজিস বা এলএসডি, স্থানীয়ভাবে বলে চামড়ার পিণ্ড রোগ। প্রাণি সম্পদ বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, এ রোগের প্রতিষেধক টিকা নেই। প্রতিষেধক হিসেবে গো-বসন্তের ভ্যাকসিন দেয়া হচ্ছে।

খামারিদের অসতর্কতার কারণে এ রোগ দেখা দিয়েছে বলে মনে করছেন প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তারা। মশা-মাছির কামড়, গায়ে আঠাজাতীয় পোকা ও অন্যের ব্যবহৃত সিরিঞ্জ ব্যবহার করলে এ রোগ দেখা দিতে পারে। এ রোগে পশু বেশ দুর্বল হয়ে পড়ে। সে কারণে পশুকে মশারির ভেতর রাখতে ও গোয়ালঘরের আশপাশ পরিষ্কার-পরিছন্ন রাখার পরামর্শ দেয়া হয়।

দেশে লাম্পি স্কিন ডিজিজ প্রথম চিহ্নিত হয় চট্টগ্রাম জেলায়। পর্যায়ক্রমে তা নারায়ণগঞ্জ, ঝিনাইদহ, মাগুরা, নড়াইল, যশোর, চুয়াডাঙ্গা, সাতক্ষীরা, খুলনা, নওগাঁ, রাজশাহী ও কুমিল্লা জেলায় ছড়িয়ে পড়ে।

ভেটেরিনারি বিশেষজ্ঞরা বলেন, মূলত মশা ও মাছির মাধ্যমে ভাইরাসজনিত রোগটি সারা দেশে সম্প্রসারিত হচ্ছে। আগে এ ধরনের রোগ দেশে ছিল না। ওষুধেরও তাই প্রয়োজন পড়েনি। লাম্পি স্কিন ডিজিজের চিকিৎসায় গোট পক্সের (ছাগলের বসন্ত) ভ্যাকসিন প্রাথমিকভাবে কাজে লাগতে পারে। তবে এ ভ্যাকসিনেরও যথেষ্ট অভাব রয়েছে দেশে।

এলএসডি প্রথম ধরা পড়ে পূর্ব আফ্রিকার কেনিয়াতে ১৯৫৭ সালে এবং সুদানে ১৯৭২ সালে এবং পশ্চিম আফ্রিকায় ১৯৭৪ সালে। ১৯৮৩ সালে এ রোগ সোমালিয়াতেও
ছড়িয়ে পড়ে। ১৯২৯ থেকে ১৯৮৬ সালের মধ্যে লাম্পি স্কিন রোগটি সাব সাহারা আফ্রিকা অঞ্চলের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল।

আফ্রিকাতে লাম্পি স্কিন বা এলএসডি প্রতিরোধে দুটি আলাদা ভ্যাকসিনের সফল ব্যবহার করা হয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকায় এলএসডির নিথলিং স্ট্রেইনটি টিস্যু কালচারের মাধ্যমে ভ্যাকসিন তৈরি করা হয়। এটির সামান্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকলে ভালোই কাজে দিয়েছে।

আর কেনিয়াতে ভেড়া ও ছাগলের বসন্তের স্থানীয় স্ট্রেইনের ভাইরাস (এসডিপিভি) থেকে উৎপাদিত ভ্যাকসিন ব্যবহার করে বেশ ভালো ফল পাওয়া গেছে। এর কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও নেই।

ভেড়ার বসন্তের অন্য আরো দুটি স্ট্রেইনের ভ্যাকসিন প্রয়োগ করেও এলএসডি প্রতিরোধ করা গেছে। ভেড়ার বসন্তের রোমানিয়ান স্ট্রেইনটির ভ্যাকসিন মিশরে কয়েক লাখ গরুর ওপর প্রয়োগ করে ভালো ফল পাওয়া গেছে। ভেড়ার বসন্তের আরেকটি স্ট্রেইন আরএম ৬৫ ইসরাইলে ব্যবহার করা হয়েছিল। সেখানেও এটি কাজে দিয়েছে। বসন্তের এ দুই স্ট্রেইনের ভ্যাকসিন গরুর শরীরে কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেনি।

Post a Comment

0 Comments