সাম্প্রতিক

6/recent/ticker-posts

খেসারী ডাল চাষ

খেসারীর চাষ পদ্ধতি
খেসারী

অন্তর্বর্তীকালীন ফসল হিসেবে খেসারীর ডাল একটি চমৎকার ডাল জাতীয় ফসল। এটি অনেকে আমন ধান কাটার পরে কোনোরকম একটি চাষ দিয়েই খেসারী বুনে দেন। তাতেই লকলকিয়ে বেড়ে ওঠে এ ফসল। ফুল আসার আগে এটি শাক হিসেবেও খাওয়া যায়। বাজারে এ শাকের বেশ চাহিদাও রয়েছে। ফলে কেউ চাইলে শুধু শাক হিসেবেও এ ফসল চাষ করতে পারেন। খেসারীর চাষ সম্পর্কে সংক্ষেপে বর্ণনা করা হলো:

মাটি
দোআঁশ এবং এটেল দোআঁশ মাটিতে খেসারী ভাল জন্মে।

জমি তৈরি
খেসারী প্রধানত তবোনা আমন ধান কাটার পূর্বে রিলে ফসল হিসেবে আবাদ করা হয়।  সেজন্য জমি চাষের প্রয়োজন হয় না। একক ফসল হিসেবে  আবাদের ক্ষেত্রে ৩-৪ টি চাষ ও মই দিতে হয়।

বপনের সময়
রিলে ফসলের ক্ষেত্রে আমন ধানের পরিপক্কতাকাল  এবং জমির রসের পরিমাণের উপর খেসারীর বীজ বপনের সময় নির্ভর করে। এক্ষেত্রে কার্তিক মাস থেকে মধ্য-অগ্রহায়ণ (মধ্য-অক্টোবর থেকে নভেম্বর) পর্যন্ত বীজ বপন করতে হয়। একক ফসলের জন্য মধ্য-কার্তিক থেকে মধ্য-অগ্রহায়ণ (নভেম্বর) মাসে বীজ বপন করা উত্তম।

বপন পদ্ধতি
রিলে ফসল হিসেবে চাষ করলে আমন ধান কাটার প্রায় এক মাস পূর্বে জমিতে পর্যাপ্ত রস থাকা অবস্থায় বীজ ছিটিয়ে বপন করতে হবে। একক ফসল হিসেবেও বীজ ছিটিয়ে বপন করা যায়। তবে সারিতে বপনের ক্ষেত্রে সারির দূরত্ব ৫০ সেমি রাখতে হবে।

বীজের হার
প্রতি হেক্টরে ৪০-৫০ কেজি বীজ লাগে, তবে রিলে ফসলের ক্ষেত্রে বীজের পরিমাণ কিছু বেশি দিতে হয়।

সারের পরিমাণ
খেসারীর রিলে ফসলের ক্ষেত্রে সারের প্রয়োজন হয় না। একক ফসলের জন্য অনুর্বর জমিতে হেক্টরপ্রতি নিমণরূপ হারে সার ব্যবহার করতে হবে।

সারের নাম সারের পরিমাণ/হেক্টর
ইউরিয়া         ৪০-৪৫ কেজি
টিএসপি ৮০-৮৫ কেজি
এমপি         ৩০-৪০ কেজি
অণুজীব সার সুপারিশ মত

সার প্রয়োগ পদ্ধতি
সমুদয় সার শেষ চাষের সময় প্রয়োগ করতে হবে। পূর্বে খেসারীর চাষ না করা জমিতে আবাদের জন্য প্রতি কেজি বীজের সাথে ১০০ গ্রাম হারে অনুমোদিত অণুজীব সার প্রয়োগ করা যেতে পারে।

ফসল সংগ্রহ
ফাল্গুন (মধ্য-ফেব্রম্নয়ারি থেকে মধ্য-মার্চ) মাসে ফসল সংগ্রহ করতে হবে।

অন্যান্য পরিচর্যা

খেসারীর ডাউনি মিলডিউ রোগ দমন
পেরোনোসপোরা ভিসি নামক ছত্রাক  এ রোগ ঘটায়। রোগাক্রামত্ম খেসারী গাছের পাতা কিছুটা হলদে হয়ে যায়। পাতার নিচে লক্ষ্য করলে ছত্রাকের অবস্থান খালি চোখেই দেখা যায়। রোগের মাত্রা বেশি হলে পাতা কুঁচকে ও ঝলসে যায়। এ ছত্রাকের জীবাণু মাটিতে ১-২ বৎসর বেঁচে থাকতে পারে।

প্রতিকার
১. রোগ প্রতিরোধী জাত যেমন বারি খেসারী-১ এবং বারি খেসারী-২ চাষ করতে হবে।
২. রিডোমিল এম জেড (০.২%) ১২ দিন অন্তর ৩ বার স্প্রে করে এ রোগ দমন করা যায়।

Post a Comment

0 Comments