সাম্প্রতিক

6/recent/ticker-posts

নদী-সমুদ্রের বা নকল ইলিশ চেনার সহজ উপায়: কোনটির স্বাদ গন্ধ অতুলনীয়

রং ও আকার দেখে ইলিশ চিনুন
ইলিশ চিনুন রঙ ও আকার দেখে

বাজারে গেলেই দেখবেন নানা আকৃতির ইলিশ। বড়সর একটা কিনে এনে বাসায় রান্না করে খাওয়ার সময় দেখবেন স্বাদ গন্ধ কিচ্ছু নেই। মনে হবে যেন সিলভার কার্প খাচ্ছেন! আবার কোনোটি ইলিশের মতো দেখতে হলেও আসলে ইলিশই নয়। এসব মাছকে বলে চন্দনা। আসে মায়ানমার থেকে। বিশেষ করে লবণ দেওয়া ইলিশে এই দুনম্বরীটা বেশি হয়।

ইলিশ মানেই স্বাদে গন্ধে অতুলনীয়! বাঙালিরর পাতে এক সময় ইলিশ ছাড়া কিছু রোচতোই না। বিশেষ করে দক্ষিণবঙ্গের মানুষ অন্য মাছ খেতেই চাইতেন না। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি ও মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বেড়ে যাওয়ায় এখন দেশের সব এলাকার মানুষই প্রচুর ইলিশ খান। তবে আসল নকল ইলিশ চেনার পাশাপাশি কোনটি নদীর আর কোনটি সাগরের সেটি চেনাও জরুরি। আবার কোনটি পদ্মার আর কোনটি মেঘনার সেটাও চিনতে পারতে হবে। কারণ প্রত্যেকটি ইলিশই আকারে, রঙে, স্বাদে এবং গন্ধে আলাদা। তবে ইলিশ চিনতে পারা খুব সহজ। আমাদের মৎস্য বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানীরাই একটি সহজ পথ বাতলে দিয়েছেন। আসুন জেনে নিই সেই কৌশল-

মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট ও মাছবিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা ওয়ার্ল্ড ফিশের গবেষণায় বাংলাদেশের ইলিশের তিনটি উপপ্রজাতি চিহ্নিত হয়েছে। সেগুলো হলো উপকূলীয়, মেঘনা ও পদ্মার ইলিশ। 

পদ্মা ও মেঘনার ইলিশ: দৈর্ঘ্যে ছোট ও প্রস্থে বড় হয়। অর্থাৎ এদের পেটটা একটু মোটা ও আয়তনে ছোট হয়। অনেকা পটলের মতো। এদের লেজও বেশ মাংসল হয়। সে তুলনায় মেঘনার ইলিশের লেজ ততোটা মাংসল নয়। আর এর গায়ের রঙ হয় চাঁদা চকচকে। অর্থাৎ আসল রূপালী ইলিশ।

মেঘনার ইলিশ: মেঘনার ইলিশ মাঝারি আকৃতির ও পেটের দিকটা একটু কালচে হয়ে থাকে। 

সমুদ্র বা উপকূলের ইলিশ: একটু সরু ও লম্বাটে হয়ে থাকে। শরীরে মাংস ও চর্বি কম। এদের স্বাদ অন্য দুই ইলিশের উপপ্রজাতির তুলনায় কম হয়। 

ধরনের পার্থক্যের কারণে এর স্বাদেও তফাত তৈরি হয়। পদ্মার ইলিশ সমুদ্র থেকে স্রোতের উল্টো পাশে প্রতিদিন কমপক্ষে ৭০ কিলোমিটার সাঁতার কেটে নদীতে পৌঁছায়। স্রোতের উল্টো দিকে ঘোলা পানি দিয়ে দীর্ঘপথ পাড়ি দেওয়ার ফলে এর গায়ের রং সাদা চকচকে হয়ে ওঠে। আর পদ্মার পানিতে পলি বেশি থাকে, ফলে তা ঘোলাটে হয়। এর ফলে এতে ডায়াটম নামে একধরনের শৈবাল (প্লাঙ্কটন) তৈরি হয়। ইলিশ সেগুলো খেয়ে পুষ্টি পায়, ফলে এর স্বাদ হয় সবচেয়ে ভালো। আর মেঘনার থাকে সবুজ নীলাভ শৈবাল। যা খেলে ইলিশের স্বাদ ভালো হয়, তবে তা পদ্মার মতো হয় না। বেশি পরিমানে নদীর প্লাঙ্কটন খাওয়ার কারণে নদীর ইলিশে প্রচুর চর্বি জমে যায়। এ কারণেও পদ্মা ও মেঘনার ইলিশে স্বাদ বেশি পাওয়া যায়। গবেষকরা বলেন, বর্ষার সময় যখন গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি যাকে বলে ইলশে গুঁড়ি বৃষ্টি এসময়টাতে ইলিশের স্বাদ হয় অতুলনীয়। 

 আর সমুদ্রের ইলিশ খায় সামুদ্রিক শৈবাল, ফলে এর স্বাদ অন্য দুটির চেয়ে কম হয়। গায়ে চর্বি কম থাকে।

Post a Comment

0 Comments